Why we want our voice to be heard?

Pages

Friday, April 1, 2011

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অভিমত আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টির তাগিদ

Prothom Alo

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অভিমত

আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টির তাগিদ

অরুণ কর্মকার | তারিখ: ৩১-০৩-২০১১
আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এক সভায় বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নিয়মিত রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। সেখানে সম্প্রতি ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) কার্যক্রম শক্তিশালী হয়ে পড়া খুবই উদ্বেগজনক।
সরকারি সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রতিটি সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় না। তবে গত ১৯ ও ২১ জানুয়ারি রাঙামাটির বরকল, জুড়াছড়ি ও কাপ্তাইয়ে জনসংহতি সমিতি এবং ইউপিডিএফের মধ্যে ব্যাপক সশস্ত্র সংঘর্ষে সাতজন নিহত হওয়ার পর ২৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কমিটির সপ্তম সভায় বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।
ওই সভায় বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত অস্ত্র ও মাদকের রুট হিসেবে ব্যবহূত হয়। সেখানকার অস্ত্রধারীদের কাছে অস্ত্র আসে মিয়ানমার ও ভারতীয় বিভিন্ন গ্রুপের কাছ থেকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমিবিরোধ একটি বিরাট সমস্যা। এর সন্তোষজনক সমাধান প্রয়োজন। এ ছাড়া, অনেক দিন যাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে এই নির্বাচনও হওয়া প্রয়োজন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এ বি তাজুল ইসলাম ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু অংশ নেন।
স্বরাষ্ট্রসচিব আবদুস সোবহান সিকদার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিজিবির মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশেষভাবে বক্তব্য শোনা হয় সেনাসদর এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) প্রতিনিধিদের। সভার কার্যবিবরণীতে আলোচকদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে উপরিউক্ত অভিমত লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
একইভাবে কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি কমিশন নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনার/রাষ্ট্রদূতেরা ঘন ঘন পার্বত্য চট্টগ্রাম সফর করছেন। সেখানে বিদেশি সাংবাদিক ও বিভিন্ন ধরনের লোকের আনাগোনাও বেড়ে গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে বিদেশিদের নিশ্চয়ই কোনো গোপন এজেন্ডা আছে। এখানে কিছু লোক উসকানিও দিচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে বিভিন্ন প্রকার অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
সভায় বলা হয়, সম্প্রতি দক্ষিণ সুদান ও পূর্ব তিমুরের রাজনৈতিক পরিবর্তন লক্ষ করলে দেখা যাবে, এর সূচনা হয়েছে ৭৫-৮০ বছর আগে। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেন ওই ধরনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে এখন থেকেই দেশের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে চিন্তা করতে হবে।
সভায় বলা হয়, ইন্টারনেটের কারণে তথ্য আদান-প্রদান এখন খুব সহজ। বিদেশি সাংবাদিকেরা পার্বত্য চট্টগ্রামে না গিয়েও তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। ইউএনডিপিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থার নিয়োগ করা উপজাতীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তালিকা থেকে এটা স্পষ্ট যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্মান্তরিত খ্রিষ্টান উপজাতীয়রা চাকরির মাধ্যমে পুনর্বাসিত হচ্ছেন।
সভায় স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে শুধু জামায়াত-শিবির নয়, জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফ নিয়মিত রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে পুনরায় অশান্ত করে তুলছে। এ বিষয়ে সভা থেকে দিকনির্দেশনা দেওয়া যেতে পারে।
এসব আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সভায় চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছে—পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি কমিশনের কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়, সে বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নবিষয়ক জাতীয় কমিটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করে কমিটি পুনর্গঠন করা যেতে পারে। তিন পার্বত্য জেলায় জরুরি ভিত্তিতে স্থানীয় সরকারসমূহের নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে ঘিরে যাতে কোনো দেশি-বিদেশি চক্রান্ত সফল না হয় এবং অশান্ত পরিস্থিতির উদ্ভব না হয়, সে বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখতে হবে।
এই চারটির মধ্যে প্রথম দুটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের। তৃতীয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগের এবং চতুর্থটি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর। তাদের কাছে সিদ্ধান্তগুলো পাঠানো হয়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় কিংবা স্থানীয় সরকার বিভাগ এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মতিউর রহমান
সিএ ভবন, ১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫
ফোন : ৮১১০০৮১,৮১১৫৩০৭-১০, ফ্যাক্স : ৯১৩০৪৯৬
ই-মেইল :info@prothom-alo.com

----------

courtesy: http://www.prothom-alo.com/print/news/143097

No comments:

Post a Comment